স্পোর্টস ডেস্ক: বার্সেলোনাকে আটকানোর খুব চেষ্টা করেছে রোমা। চ্যাম্পিয়নস লিগ কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে কাতালানদের হয়েই যেন খেললো তারা! তাদের দুই আত্মঘাতী গোলের সঙ্গে জেরার্দ পিকে ও লুই সুয়ারেসের লক্ষ্যভেদে বার্সেলোনা পেয়েছে ৪-১ গোলের জয়। যাতে সেমিফাইনালের পথে কাতালানরা ফেলল বড় ধাপ।
ন্যু ক্যাম্পের প্রথম লেগের আগের লিওনেল মেসিকে নিয়ে সবচেয়ে বেশি দুশ্চিন্তা ছিল রোমার। দলটির ডিফেন্ডার কোসতাস মানোলাস দিনকয়েক আগে পেপ গার্দিওলার করা ‘মেসিকে আটকানোর কোনও পথ নেই’ মন্তব্যের সঙ্গে একমত হয়েছিলেন। আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ডকে তারা আটকাতে পেরেছে, গোলহীনভাবেই মাঠ ছেড়েছেন পাঁচবারের ব্যালন ডি’অর জয়ী। কিন্তু মেসিকে আটকাতে গিয়েই নিজেদের সর্বনাশটা করেছে রোমা।
শুরুতে কাতালানরা স্বাভাবিক খেলা খেলতে পারেনি। তাদের অগোছানো ফুটবলে প্রথম সুযোগটা আসে মেসির পা ধরেই। বক্সের বেশ খানিকটা বাইরে থেকে শট করেছিলন আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড। আচমকা শটটি ঝাঁপিয়ে প্রতিহত করেন রোমা গোলরক্ষক আলিসন।
১৮তম মিনিটে কাতালানরা পেয়েছিল সুবর্ণ সুযোগ। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়ায় গোলপোস্ট। ইভান রাকিটিচের নেওয়া কর্নার থেকে উড়ে আসা বল ক্লিয়ার করতে চেয়েছিলেন রোমা ডিফেন্ডাররা। কিন্তু ঠিকমতো করতে পারেননি। বল আবার চলে আসে রাকিটিচের কাছে। ক্রোয়েট মিডফিল্ডারের মাটি কামড়ানো শট বাঁক খেয়ে আঘাত করে পোস্টে।
বার্সেলোনা বারবার সুযোগ নষ্ট করায় ৩৮তম মিনিটে রোমাই সম্ভবত দায়িত্বটা কাঁধে নিয়েছিল তাদের এগিয়ে যাওয়ার! নইলে দানিয়েল দি রোসি ওভাবে বল জালে জড়াবেন কেন! আন্দ্রেস ইনিয়েস্তাকে বল দিয়ে বক্সের ভেতর ঢুকে পড়েছিলেন মেসি, স্প্যানিশ মিডফিল্ডার ফিরতি পাসও দিয়েছিলেন আর্জেন্টাইন অধিনায়কের দিকে। তবে মেসির পথ আটকাতে গিয়ে ইনিয়েস্তার পাস দি রোসির পা হয়ে জড়িয়ে যায় জালে।
১-০ গোলে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয়ার্ধ শুরু করা বার্সেলোনা শুরুতেই সুযোগ তৈরি করে। তবে ৫৪ মিনিটে মেসির ডান পায়ের শট ঠেকিয়ে দেন রোমা গোলরক্ষক। ইনিয়েস্তার চমৎকার পাস রোমার এক ডিফেন্ডারকে বোকা বানিয়ে মেসি ঢুকে পড়েছিলেন বক্সে, এরপর ডান পায়ে শট নিলেও তা ঠেকিয়ে দেন আলিসন।
মিনিট দুয়েক পরই আবার বার্সেলোনাকে রোমার গোল ‘উপহার’। আবারও আত্মঘাতী! কাতালানদের একের পর আক্রমণে ব্যস্ত থাকতে হচ্ছিল সফরকারী রক্ষণভাগকে। তেমনি এক আক্রমণে নিজেদের জালে বল জড়িয়ে দেন ডিফেন্ডার কোসতাস মানোলাস। রাকিটিচের ক্রস স্যামুয়েল উমতিতির পায়ে লেগে প্রতিহত হয় পোস্টে, ফিরতি বল গ্রিক ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে জড়িয়ে যায় জালে।
৭৯ মিনিটে এক গোল শোধ করে রোমা। বক্সের ভেতর থেকে লক্ষ্যভেদ করেন এডিন জেকো। ডিয়েগো পেরোত্তির চমৎকার ক্রস নিয়ন্ত্রণে নিয়ে একেবারে গোলমুখের সামনে থেকে লক্ষ্যভেদ করেন এই স্ট্রাইকার।
তাতে বরং আরও ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে কাতালানরা। যার ফলও ভোগ করে রোমা। শেষ বাঁশি বাজার মিনিট তিনেক আগে সফরকারীদের জালে দলের হয়ে চতুর্থবার বল জড়ান লুই সুয়ারেস। দেনিস সুয়ারেসের ক্রস রোমার এক খেলোয়াড়ের পায়ে লেগে চলে আসে উরুগুইয়ান স্ট্রাইকারের সামনে। এরপর বাঁ পায়ের প্লেসিং শটে বল জালে জড়িয়ে দেন সুয়ারেস।
তাতে ৪-১ গোলে এগিয়ে থাকার সুবিধা নিয়ে সামনের সপ্তাহে রোমার মাঠে ফিরতি লেগে নামবে বার্সেলোনা।